১৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মুসলমানরা নিয়মিতভাবে রমজান মাসে রোজা রেখে আসছেন। শুধু ধর্মীয় রীতি অনুসারেই নয়, রোজা রাখার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। যা আপনাকে বিস্মিত করবে।
জানেন কি, প্রাচীন গ্রীকরা শরীরকে সুস্থ রাখেতে রোজা রাখার পরামর্শ দিয়েছিল। এমনকি কিছু বিজ্ঞানীরাও রোজা রাখার মানসিক ও শারীরিক সুবিধা গবেষণার মাধ্যমে খুঁজে বের করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনের বেলায় কম খাদ্য গ্রহণের ফলে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন- উচ্চ কোলেস্টেরল, হৃদরোগ ও স্থূলতা প্রতিরোধ করে। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতার উন্নতি ঘটায়। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক রোজা রাখার আরও উপকারিতা সম্পর্কে-
রমজানে বেশিরভাগ মানুষই ইফতারে খেজুর খান। এর মাধ্যমে শরীরে মেলে একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা। অতিরিক্ত বোনাস নিয়ে আসে। একটি খেজুরে ৩১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে। এমনকি এতে থাকা ফাইবার হজমে সহায়তা করে। খেজুরে উচ্চ মাত্রায় পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন বি থাকে। খেজুরকে সুপারফুডও বলা হয়।
মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটে রোজ রাখলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কে নতুন কোষ গঠেনে সাহায্য করে ফাস্টিং। ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার উন্নতি ঘটে। একইভাবে অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি দ্বারা উৎপাদিত হরমোন কর্টিসলের পরিমাণ কমার কারণে মানসিক চাপও কমে।
সব ধরনের বদঅভ্যাস দূর করার রমজান মাস সেরা সময় হতে পারে। যাদের ধূমপানসহ চা বা কফির নেশা আছে তারা চাইলেই এ সময় বাজে অভ্যাসগুলো এড়িয়ে চলতে পারেন। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের তথ্যমতে, ফাস্টিংয়ের মাধ্যমে ধূমপান খুব সহজেই ত্যাগ করা যায়।
রোজা রাখলে কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের কার্ডিওলজিস্টরা এক সমীক্ষার মাধ্যমে দেখতে পান, রোজা রাখার ফলে লিপিড প্রোফাইলে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টেরলে ভুগছেন এমন রোগীদের রক্তে কোলেস্টেরল দ্রুত কমতে শুরু করে।
কম কোলেস্টেরল কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য বাড়ায়, হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। রমজানের পর আপনি একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করেন, তাহলে কোলেস্টেরলের মাত্রা একেবারে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব
ওজন কমানোর রেসে যারা দৌড়ান তারা ওজন কমালেও পরবর্তীতে তা আবারও বেড়ে যায়। কখনো কখনো অতিরিক্ত ওজন বাড়িয়ে দেয়। তবে জানেন কি, রমজানে রোজা রাখার কারণে পাকস্থলী ধীরে ধীরে সঙ্কুচিত হয়ে যায়।
ফলে কম খাবারেও আপনি পেট ভরা অনুভব করবেন। ফলে অতিরিক্ত ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকবে না। তাই স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করার মাধ্যমে এ সময় খুব সহজেই কিন্তু আপনি ওজন ঝরাতে পারেন।
ফাস্টিং বা রোজার মাধ্যমে আপনি শরীরকে টক্সিনমুক্ত করতে পারবেন সহজেই। সারাদিন না খেয়ে থাকার মাধ্যমে পাচনতন্ত্রকে ডিটক্সিফাই করার সুযোগ মেলে রমজানে।
যখন আপনার শরীর শক্তির জন্য জমিয়ে রাখা চর্বি পোড়াতে শুরু করে তখন এর সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিকারক টক্সিনগুলোও ধ্বংস হয়ে যায়। এ কারণে শরীর বিষমুক্ত করতে ফাস্টিংয়ের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে রোজা রাখার সময় সেহরি ও ইফতারের খাবারও নিশ্চিত করা জরুরি !