কিশোরগঞ্জ পৌর এলাকার চরশোলাকিয়া ও মহিনন্দ ইউনিয়নের গাছ বাজার এলাকায় চলছে অবৈধ গাছ বাজারের রমরমা ব্যবসা। অসাধু প্রভাবশালীরা সপ্তাহের দুই দিনে তুলে নিচ্ছেন লক্ষাধিক টাকা গাছ বাজারের অবৈধ টাকা মালিক কে ? সরজমিনে সাক্ষাৎকারে গিয়ে জানা যায়, পৌর মেয়র মোঃ পারভেজ মিয়া জানান, বাজারটি অনেকদিন যাবৎ চলছে। এটা ইজারা হয়নি। আগামী অর্থ বছরে ইজারার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কেউ টাকা তুলছে না পৌরসভা থেকে। টাকা তোলার অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী এক সাক্ষাৎকারে জানান, ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন থেকে মহিনন্দ ইউনিয়নের রঘুখালী ব্রীজ পর্যন্ত অবৈধ গাছ বাজারটি পৌর মেয়রের সাথে কথা বলে অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমরা গাছ বাজার নামে কোন ইজারা দেইনি। তবে এ বাজারটি স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠেছে বলে আমরা ইতিমধ্যে খবর পেয়েছি। তাই সরজমিনে জানা যায়, প্রায় অর্ধলক্ষ লোক দিশেহারা এই অবৈধ গাছ বাজারের জন্য। বুধবার শোলাকিয়া গাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৪ হাজার টমটম, ঠেলাগাড়ি, গরুর গাড়ি, লরি ট্রাক, ভটভটি বোঝাই গাছ রয়েছে। একাধিক গাছ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা প্রতি গাড়ি থেকে ২০টা করে খাজনা দেয় এবং প্রতি সপ্তাহে দুটি বাজারেই অংশগ্রহণ করে। বাজারের নিয়ন্ত্রনে শোলাকিয়া এলাকার একজন ও হাজরাদি এলাকার মেম্বারের একজন লোকের নেতৃত্বে একাধিক ব্যক্তিরা এই টাকা তোলে। তবে তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন গাছ বাজার খেকো অসাধু ব্যক্তিরা। এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ পৌর মেয়র জানিয়েছেন, তিনি আজ পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাননি। তবে অভিযোগ না পেলেও আগামী অর্থ বছরে বাজারটি রাজস্ব খাতের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে এবং ইজারা দেয়ারও চিন্তাভাবনা চলছে। তিনি এও জানান, বাজারটিকে স্টেশন রোড থেকে আনা হয়েছিল প্রায় সাত বছর আগে। তবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যায়নি বাজারের চাহিদার কারণে। এখন বাজারটি জমে উঠেছে তাই অবৈধ বাজারটিকে বৈধ করার জন্য রাজস্ব খাতের আওতাভূক্ত করা হবে। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের সংলগ্ন গাছ বাজারটি চলমান আছে। বাজারের বেশি অংশ পৌর এলাকায় হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে বাজারটির বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ বাজারটি যে জায়গায় গড়ে উঠেছে সেখানে আবাসিক ঘনবসতি রয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন মহিনন্দের অধিকাংশ লোক এ রাস্তাটি ব্যবহার করে হাসপাতাল ও অন্যান্য কাজের জন্য। যাতায়াতের এ রোডটিতে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার লোকের যাতায়াত রয়েছে এবং এই রোডটিকে কেন্দ্র করে বসতির জনসংখ্যা প্রায় অর্ধলক্ষ। তাই জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ অবৈধ গাছ বাজারটি। বাজারে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, অবৈধ টাকা যাচ্ছে অসাধু ব্যক্তির হাতে, নষ্ট হচ্ছে সরকারি রাস্তা এবং দুর্ভোগে দিশেহারা অর্ধলক্ষ জনসাধারণ।