শেখ হাসিনা সবচেয়ে বড় জঙ্গিবাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরখানে জামায়াতে ইসলামী উত্তরখান পশ্চিম থানার উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা পরিবর্তিত বাংলাদেশে বসবাস করছি। পতিত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে আমরা উন্নয়নের গালগল্প শুনেছি। যেন উন্নয়ন মহাকাশ ছুঁয়ে গেছে। ফ্যাসিবাদীদের ভাষায়, দেশে রাজাকার আর জঙ্গি ছাড়া কোনো সমস্যা ছিল না। অথচ দেশে এখন কোনো জঙ্গি নেই বরং শেখ হাসিনার সঙ্গে এদেশ থেকে জঙ্গিরাও পালিয়ে গেছে। কিন্তু তারা এই জঙ্গিবাদের ধোঁয়া তুলেই দেশ বরেণ্য আলেম-ওলামা, মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক এবং দাঁড়ি-টুপিওয়ালাদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে বিশ্ব দরবারে তাদের অসম্মান ও হেয়-প্রতিপন্ন করেছে। তাই এই পতিত স্বৈরাচারকে যে কোনো মূল্যে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। অন্যথায় দেশে জঙ্গিবাদী নাটকের নেপথ্য কথা জানা যাবে না। তিনি পলাতক শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে সরকারকে বলিষ্ঠ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আগস্ট বিপ্লবের পরও আমরা খুব একটা ভালো নেই। আমাদের সমস্যা যে তিমিরে ছিল সে তিমিরেই রয়ে গেছে। কারণ, পতিত ফ্যাসিবাদের প্রতিভূরা রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে এখনো সক্রিয়। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। দেশে দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানা যায়নি। কৃষিপণ্যের মূল্য আকাশচুম্বী হলেও কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের নায্যমূল্য পাচ্ছেন না। অথচ বাজারে নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্য। সবকিছুই স্বৈরাচারের সিন্ডিকেট, টেন্ডারবাজ ও চাঁদাবাজদের নিয়ন্ত্রণেই রয়ে গেছে। আর এসব সিন্ডিকেট, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ছিলেন শেখ হাসিনাসহ তার সরকারের শীর্ষনেতা থেকে শুরু করে অতিনেতা-পাতি নেতারা। দেশে দ্রুত সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বাজার নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তাদের ভয় পাবার কোনো কারণ নেই বরং দেশের জনগণ তাদের সঙ্গেই রয়েছে। তিনি সব প্রকার রাজনীতি ও ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে ওঠে সরকারকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। জাতি চিরদিন তাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
থানা আমির শেখ নিজাম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি আ. রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য জামাল উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন উত্তরখান পূর্ব আমির ইসরাইল হোসেন, অধ্যাপক কামাল উদ্দিন রায়হান, ইমাম উদ্দিন পন্ডিত উপস্থিত ছিলেন।