কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ বিধান
ব্যাংক নিরীক্ষায় নিয়োগ হচ্ছে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান
ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিভিত্তিক সমন্বিত নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে যোগ্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করতে একটি বিশেষ বিধান প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই বিধানে ব্যাংক কোম্পানি ও ব্যাংকিং নীতিমালার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করবে, যারা নির্দিষ্ট ব্যাংকে গভীর নিরীক্ষা চালাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আইন অনুযায়ী, ‘স্পেশাল রেগুলেশনস অব বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৪’ শীর্ষক এই বিধান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের এক বৈঠকে প্রণয়ন করা হয়। রোববার (২২ ডিসেম্বর) দেশের সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিধানে বলা হয়েছে, ব্যাংকের সমন্বিত নিরীক্ষা বা তার অংশ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যোগ্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করবে। সমন্বিত নিরীক্ষার শর্তাবলি এবং এ কাজের জন্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে যে সম্মানী দেওয়া হবে বা যে পদ্ধতিতে তা পরিশোধ করা হবে, তা চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সমন্বিত নিরীক্ষা বা তার অংশ তারা যেভাবে সুবিধাজনক মনে করে, সেভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে। এ সংক্রান্ত শর্তাবলি নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে তাদের আলাদা চুক্তি হতে হবে।
সমন্বিত নিরীক্ষার জন্য দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলো যাতে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে তাদের গ্রাহকদের বিষয়ে তথ্য জোগানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ এ বিধানের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে সাধারণ অনুমতি দিয়েছে। ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সমন্বয় করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট বিভাগকে দায়িত্ব দেবে। চুক্তি অনুসারে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গভর্নরের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে। গভর্নর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওই প্রতিবেদন পরিচালনা পর্ষদের কাছে পেশ করবেন।
বিশেষ বিধানে সমন্বিত নিরীক্ষার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে ঝুঁকিভিত্তিক বিস্তারিত নিরীক্ষা করা হবে। যার মধ্যে থাকবে সম্পদের মান পর্যালোচনা, করপোরেট সুশাসন পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং ব্যাংকের নীতি, পদ্ধতি, প্রক্রিয়া এবং আইন ও নিয়ন্ত্রণমূলক বিধিবিধানের পরিপালন বিষয়ে পর্যালোচনা।
এ বিধান জারির কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও দেশের কিছু ব্যাংক বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। বিশেষ করে সম্পদের মান, করপোরেট সুশাসন, নীতিমালা এবং আইন ও বিধিবিধানের পরিপালনের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর ফলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর সাধারণভাবে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস নষ্ট হচ্ছে। এতে পুরো ব্যাংক খাতের বিশ্বাসযোগ্যতাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।