1. admin@bdprothombarta.com : admin :
রাজবাড়ীতে বাক্সে মৌমাছি পালন, মাসে লাখ টাকা আয়ের আশা - বিডি প্রথম বার্তা
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন

রাজবাড়ীতে বাক্সে মৌমাছি পালন, মাসে লাখ টাকা আয়ের আশা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত : রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২ বার পঠিত

বাক্সে মৌমাছি পালন করে মাসে লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন রাজবাড়ীর মৌ-চাষি মো. মাসুদ। পড়াশোনার পাশাপাশি বছরের ৮ মাস ভ্রাম্যমাণ অবস্থায় জেলার বিভিন্ন স্থানে বাক্স বসিয়ে মৌমাছি পালন করে মধু আহরণ করেন তিনি। এতে একদিকে যেমন মধু আহরণ করে লাভবান হচ্ছেন; তেমনই মৌমাছির মাধ্যমে ফসলের পরাগায়ন ঘটায় উৎপাদন বেড়ে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।

 

মৌ-বাক্স স্থাপনের ১২-১৫ দিনের মধ্যেই মধু সংগ্রহ করা যায়। মৌসুমের শুরুতে সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধ ভাবে মৌ-বাক্স বসিয়ে শুরু হয় মৌমাছি পালন। এভাবে ২ মাস ধরে চলে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ। এরপর ধনিয়া, কালোজিরাসহ বিভিন্ন ফসলের মধু আহরণ করে বছরের ৮ মাস অতিবাহিত করেন। মৌ-চাষে নিজেদের থাকা-খাওয়ার খরচ ও মৌমাছির পরিচর্যা ছাড়া তেমন বাড়তি খরচ নেই। ফলে বাক্সে মৌ-চাষ একটি লাভজনক পেশা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

জানা যায়, রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দের বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষ হয়েছে সরিষা। মাঠে মাঠে হলুদ ফুলের সমারোহে প্রকৃতি যেন সেজেছে অপরূপ সাজে। অল্প খরচে সরিষা একটি লাভজনক চাষ। ফলে পরাগায়নের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বাড়াতে মাঠের পাশেই বসানো হয়েছে মৌ-বাক্স। ভনভন শব্দে বাতাসের সাথে মাঠে উড়ছে মৌমাছি। সরিষা ফুলে বসে আহরণ করছে মধু।

এবার রাজবাড়ী সদরের বাগমারা, রামকান্তপুর, গোয়ালন্দসহ বিভিন্ন স্থানে সরিষা ক্ষেতের পাশে বাক্সে মৌমাছির চাষ থাকায় পরাগায়নের মাধ্যমে অন্য বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো পাওয়ার আশা চাষিদের। এমনকি মধু সংগ্রহ করে এক স্থান থেকে মাসে প্রায় ৯০ হাজার টাকা আয়ের আশা মৌ-চাষির।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এখন পর্যন্ত চাষ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে। অতিবৃষ্টি ও পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় এ বছর সরিষার আবাদ কিছুটা কমেছে। জেলার রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দে সরিষার আবাদ বেশি হয়ে থাকে।

খায়রুল ইসলাম ও খন্দকার বিল্লাল নামে সরিষা চাষি বলেন, ‘মৌমাছির কারণে এবার সরিষার ফলন অনেক ভালো হবে বলে আশা করা যায়। গত বছর মৌমাছি ছিল না বিধায় ফলনও ভালো হয়নি। আমাদের পুরো মাঠেই এবার সরিষা চাষ হয়েছে। অনেকে দূর থেকে আসেন এবং ছবি তোলে। এটি দেখে ভালো লাগে।’

 

আলম মিয়া নামে আরেক চাষি বলেন, ‘মৌমাছি থাকায় কৃষকদের অনেক উপকার হচ্ছে। মৌমাছির কারণে সরিষার দানা পুষ্ট হবে। ভালো ফলন হবে। আগে যেটা হতো না। এ রকম প্রতি বছর হলে কৃষকেরা উপকৃত হবেন। যে কারণে মৌচাষির ফোন নম্বর রেখে দিয়েছি। ফসলের সময় তাদের ডেকে আনবো ফসলের উৎপাদন বাড়াতে।’

মৌ-চাষি মো. মাসুদ বলেন, ‘এই সরিষা ক্ষেতের পাশে ৬২টি মৌ-বাক্স বসিয়েছি। সরিষার পরিচর্যা ঠিক থাকলে এবং মৌমাছি পরাগায়ন ঘটালে ফসলের ২০ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এ মৌসুমে সরিষার পর পর্যায়ক্রমে সরিষা, ধনিয়া, কালোজিরা এভাবে বিভিন্ন স্থানে বাক্স স্থাপনের মাধ্যমে বছরের ৮ মাস মধু আহরণ চলে। সরিষা থেকে ২ মাস চলবে মধু আহরণ। এই মৌ-বাক্স থেকে প্রতি মাসে ৮০-৯০ হাজার টাকার মধু আহরণের আশা করছি। মৌমাছির পেছনে তেমন খরচ নেই। শুধু পরিচর্যা ও দেখাশোনা করতে হয়।’

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে পিছিয়েছে সরিষা চাষ। যে কারণে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। তবে রবি মৌসুমের অন্য ফসলের চাষ বেড়েছে। কৃষি বিভাগ চাষিদের পাশে আছে। এ মৌসুমে মৌ-চাষের মাধ্যমে পরাগায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি স্থানে মাঠের পাশে মৌ-চাষিরা মৌ-বাক্স বসিয়েছেন।’

 

 

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরও খবর
© All rights reserved © 2022 BD Prothom Barta
Theme Customized BY LatestNews