গত ০১ জুন রোজ সোমবার দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলা ৩ নং ফতেজংপুর ইউপি-র কিসমত ফতেজংপুর (কালাচাঁন) নামক স্থানে বাবাকে মোটরসাইকেল কেনার কথা বলেন মো: মেহেদী হাসান।বাবা মো: সিদ্দিক হক ছেলের কাছে কিছু দিন সময় চাওয়ায় মেহেদী হাসান (২২) তার চার মাসের অন্তসত্বা স্ত্রী এবং পরিবার রেখে আত্মগোপন করেন।
মো: সিদ্দিক হক-এর অভিযোগ তার ছেলে মেহেদী হাসান মানসিক ভাবে কিছুটা দূর্বল। গত ০১ জুন ২০২৪ ইং তারিখ থেকে মেহেদী-কে খুঁজে পাওয়া না গেলে গত ১৭ জুন রোজ বুধবার সিদ্দিক হক চিরিরবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন, যাতে উল্লেখ ছিলো ছেলে মেহেদী হাসান নিখোঁজ। পরিবারের কারো সাথে কোনো মাধ্যমেই যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিলো না।
উম্মে কুলসুম (মেহেদীর স্ত্রী) অভিযোগ করে বলেন মেহেদী কিছুদিন ধরেই এলাকার বেশ কিছু মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ী আরিফ (২২), রোকন (২১), নুরনবী (২৭), মমিনুল (২৩) এবং রাজ্জাক (২৮) সাথে ওঠাবসা শুরু করেন। বিভিন্ন সময় মাদক সেবন করে বাসায় এসে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করত মেহেদী। কিছুদিন ধরে পরকীয়ার সাথে জড়িয়ে পরেছে মেহেদী।এই বিষয়ে বলতে গেলেই বেধরক মারত এবং সম্পর্ক বিচ্ছেদ (তালাক)’র হুমকিও দিতো মেহেদী। এই ঘটনায় আরিফ, রোকন, নুরনবী, মমিনুল এবং রাজ্জাক আমার স্বামী মেহেদীকে সহযোগিতা করেছেন বলেও জানান তিনি।
সিদ্দিক জানান ছেলে মেহেদী-কে মাদক সেবনকারীদের সংগ ছাড়তে ঠাকুরের হাট নামক বাজারে একটি দোকান মূল মালিক গজেন্দ্রনাথ এর কাছ হতে নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে আমি মো: সিদ্দিকের নামে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ইলেকট্রনিকস কিছু পণ্য সামগ্রী কিনে দেই। পরে মেহেদী ১ জুলাই ২০২৪ ইং তারিখ আরিফ গংদ্বয়ের নিকট আমার ভাড়াকৃত দোকানের চাবি দিয়ে আত্মগোপন করে। পরে উক্ত বিষয়ে থানায় আরিফ গংদের নামে একটি অভিযোগ দ্বায়ের করি। এবং উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে চিরিরবন্দর থানায় দুই পক্ষ উপস্থিত হলে সকল বিষয় বনমালী (এস আই) শুনে এবং সকল বিষয়ের প্রেক্ষিতে দোকান যার নামে সেই দোকান চালাবে বলে জানান থানার কর্মরত এবং দ্বায়িত্বরত এস আই বনমালী। আরিফ এর দাবী মেহেদী দোকানটি তাদের নিকট বিক্রি করে দিয়েছে,তবে এর সঠিক কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি আরিফরা। এবং ২০ জুলাই ২০২৪ ইং রোজ শনিবার আমি আমার নামীয় দোকান খুলতে গেলে আরিফ সহ তার সঙ্গীয়রা মিলে আমায় বাধার সৃষ্টি করে। পরে আমি এবং আমার ভাইয়েরা মিলে আমার দোকান পুনরায় চালু করি। পরবর্তীতে আরিফ এবং তার লোকেরা থানায় আমি সিদ্দিক সহ বেশ কয়েকজনের নামে মিথ্যা এজাহার আকারে অভিযোগ দ্বায়ের করেন। তদন্ত চলমান।
সিদ্দিক হক আরও বলেন ছেলে মেহেদী নিখোঁজের ঘটনায় আমরা চিরিরবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করালে সেদিনই আরিফ এবং রোকন বিকাল বেলায় মেহেদীকে থানায় উপস্থিত করেন। উক্ত বিষয়ে থানায় আলোচনা শেষ করে মেহেদী কে বিগত ১৯ জুন রোজ শুক্রবার আবার থানায় উপস্থিতির ডাক দেন থানার দ্বায়িত্বরত পুলিশ সদস্য বনমালী (এস আই)। মেহেদী শুক্রবার থানায় দেখা করে তারপর বাড়ি যাবে বলে আবারও আরিফ এবং রোকনের সাথে-ই থানা ত্যাগ করেন। পরে শুক্রবার আর থানায় আসে না মেহেদী। উক্ত ঘটনার বিষয়ে ৩ নং ফতেজংপুর ইউপির ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য মওদুদ এলাহী মধু সকল বিষয় অবগত আছেন বলে জানান মো: সিদ্দিক হক।
৩ নং ফতেজংপুর ইউপির সদস্য(৬) মওদুদ এলাহী মধুর সাথে মুঠোফোনে এই বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি বেশি কিছুই জানেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। যদিও আমাদের অনুসন্ধানে শুরু থেকেই সদস্য মধু মিয়া সকল বিষয় জানেন বলে এলাকার বেশ কিছু লোক জানান। উক্ত বিষয় সদস্য মওদুদ এলাহী মধু আমাদের এড়িয়ে যান।
উক্ত ঘটনায় জড়িত আরিফ- এর সাথে সত্যতা নিশ্চিত করতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে দুই দিন তাকে প্রায় বেশ কয়েকবার ফোন দেওয়ার পরেও আরিফ আমাদের ফোন কলটি ধরেন নি। দোষীদের মত করেই এড়িয়ে গেলেন এই ঘটনার প্রধান আরিফ।থানায় আরিফের নামে একটি মাদক মামলা আছে বলে থানার গোপন সূত্র জানান।
সিদ্দিক আরও অভিযোগ করেন আরিফ সহ তাদের বেশ কয়েকজনের সক্রিয় সদস্যের একটি দল আমাদের বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন, মারধর, খুন সহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলার হুমকিও প্রায়শই দিয়ে আসছে। খুব আতংকিত হয়ে আছি পরিবার নিয়ে।