কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড বেপারী পাড়া মোড় এলাকায় সরকারি কালভার্টের সংযোগ স্থানে ড্রেনের পানি নিষ্কাশন লাইন বন্ধ করে পারিবারিক রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ব্যক্তি রমজান আলীর বিরুদ্ধে। এতে বর্ষা মৌসুমে ঐ এলাকার প্রায় কয়েক শত পরিবার পানিবন্ধী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৯নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা বাচ্চু মিয়ার নিকট থেকে মেইন সড়কের পাশে দুই পয়েন্ট জমি ক্রয় করেন চুন্নু মিয়া। জমি ক্রয়ের পর থেকে একই এলাকার রমজান আলীর সাথে চুন্নু মিয়ার জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পূর্বে বিরোধ চলে আসছিল।
সম্প্রতি চুন্নু মিয়ার ক্রয়কৃত জমির সীমানা অনুযায়ী মাটি দিয়ে ভরাট করেন। একই সাথে সড়কের মাটি ধসে যাওয়ার কথা বিবেচনা করে কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগে আবেদনের মাধ্যমে রাস্তার ঢালু অংশটি মাটি দিয়ে ভরাট করে। এতে রমজান আলী ক্ষিপ্ত হয়ে চুন্নু মিয়ার জমির সীমানার পাশে ড্রেনের উপর দিয়ে পারিবারিক রাস্তা নির্মান করেন। কিন্তু রমজান আলীর নতুন নির্মাণকৃত রাস্তার পাশে তার কোন বাড়ির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সরকারি সড়কের পাশে কৃষি জমি এবং জমির পাশে রয়েছে পুকুর যে পুকুর ভরাট করে রমজান আলী ভবিষ্যতে রাস্তা করার চিন্তা করছেন বলে জানায় তার ছেলে মোশের্দ। কালভার্টের পাশের জমির মালিক স্থানীয় বাসিন্দা মো: রেনু মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, একাধিক পারিবারের চলাচলের জন্য কালভার্ট সংলগ্ন একটি রাস্তা আছে। এক পরিবারের জন্য এতবড় একটি রাস্তার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।
এ বিষয়ে রমজান আলীর ছেলে মোরশেদ মিয়া বলেন, আমরা বাড়ি করার চিন্তা অনেক পরে। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারে সেই জন্য রাস্তা নির্মান করেছি।
এ ব্যাপারে চুন্নু মিয়া বলেন, আমি আমার ক্রয়কৃত জমি মাটি দিয়ে ভরাট করেছি। সরকারী রাস্তা ধসে যাওয়ার কথা চিন্তা করে মাটি দিয়েছিলাম। সরকার বললে মাটি সরিয়ে নিব। কিন্তু আমি ড্রেনের জায়গা রেখে দেওয়াল নির্মাণ করেছি। এতে পানি নিস্কাশনের কোন ক্ষতি হবে না বলে আমি মনে করি।
এ বিষয় করিমগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সির শাহাবুউদ্দিন বলেন, স্থানীয়দের চলাচলের জন্য রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে। নতুন করে রাস্তা নির্মানের প্ল্যান নেই।
করিমগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মুসলেহ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি জানি, আমি ন্যায়ের পক্ষে। বাড়ির লোকজন চলাফেরার জন্য রাস্তা আছে। তারপরেও এ ব্যাপারে আমি সঠিক ব্যবস্থা নিব।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (অ:দা:) মো: মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। নোটিশের মাধ্যমে নির্মাণকৃত রাস্তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিব। সরকারি জায়গা ব্যবহার করলে আবেদন করতে হয়। লিজ নেওয়ার মাধ্যমে সরকারি জায়গা একমাত্র ব্যবহার করা যায়। অন্যথায় বেআইনি দখল হিসেবে গণ্য করা হবে।
এই বিষয়ে সাবেক মেয়র হাজী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, সরকারি জায়গায় কেউ পারিবারিক স্থাপনা নিমার্ণ করতে পারবে না। জনগণের কল্যাণে যেকোন সিদ্ধান্ত সরকারের অনুমতিক্রমে করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা শিঘ্রই বসবো।
করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে মেয়র সাহেব অবগত আছেন। আসাকরি অচিরেই এই সমস্যার সমাধান হবে।
এ ব্যাপারে করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন সুলতানাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।