ঈদুল আযহার বাকি মাত্র কয়েকদিন। ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামারেরা। তবে ক্রেতার দেখা মিলছে না। সরেজমিনে কামারের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টুং টাং শব্দে মুখরিত। সারা বছর তারা কোরবানি ঈদের অপেক্ষায় থাকেন। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। কয়েকজন কামারির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য বছর এ সময় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় থাকতো। অথচ এবার ক্রেতার দেখা মিলছে না। বেশি দামে মাল এনেছেন। বিক্রি না হলে যে পথে বসতে হবে। কোরবানির ঈদের প্রধান অনুষঙ্গ দা, ছুরি, বটি, চাপাতি। তাই প্রতি বছর কোরবানির ঈদে কামারদের থাকে ব্যস্ততা। অর্ডার অনুযায়ী খদ্দেরকে সরবরাহ করতে হয় কোরবানির অনুষঙ্গ। কামারেরা পূঁজি বিনিয়োগ করেছেন। তবে পর্যাপ্ত মুনাফা নিয়ে চিন্তিত। সব মিলিয়ে চরম সমস্যায় রয়েছেন কিশোরগঞ্জের কামার সম্প্রদায়। প্রতি বছর কোরবানির ঈদে সবাই বিনিয়োগ করে। চট্টগ্রাম থেকে লোহা আনেন। দা, ছুরি, বটি, চাপাতিসহ পশু কোরবানি ও গোশত কাটার জন্য যে সব ধারালো তৈজসপত্র লাগে তারা তৈরি করেন। দোকানে সাজিয়ে রাখেন। ক্রেতারা আসেন। পছন্দ করেন। দরদাম শেষে কিনে নিয়ে যান। কেউ বা নিজের মত করে লোহা পছন্দ করে ধারালো তৈ অর্ডার দিয়ে যান। গত কয়েক বছর ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। বাজার মন্দা। সবাই খুব চিন্তিত আছে। যদি এমন অবস্থা বিরাজ করে তাহলে পূঁজি উঠানো সমস্যা হয়ে যাবে। কিশোরগঞ্জের বড় বাজারের কামার স্বপন কর্মকার জানান, প্রতিবারের চেয়ে এ বছর কাজের চাপ অনেক কম। আগে খুব সকালে দোকানে আসতাম আর বাড়ি যেতাম গভীর রাতে। এখন কাজের চাপ কম থাকায় তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে বাড়ি চলে যাই। গড়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০টি কাজ করে ৫শ' থেকে হাজার টাকা আয় হচ্ছে ২-৩ দিন ধরে। আগের বছর এ সময়ে এর চেয়ে বেশি আয় হয়েছিল। একটি বড় দা বটি ১ কেজির লোহা দিয়ে তৈরি করে মজুরিসহ ৬০০ টাকা, চামড়া ছাড়ানো ছোট ছুরি ১৫০ টাকা, চাপাতি প্রকার ভেদে ৬শ' টাকা থেকে ১ হাজার টাকা, জবাই দেয়ার ছুরি ৬শ' টাকা থেকে ৮শ' টাকা করে নিচ্ছেন তারা। আর একটি দা শান দিতে ৮০ টাকা, একটি বটি শান দিতে ৬০ টাকা ও একটি ছুরিতে শান দিতে ৫০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, অন্য সময়ের চেয়ে এখন চাপাতি, চাকু, ছুরির দাম বেশি রাখা হচ্ছে। কামাররা বলছেন, শ্রমিকের মজুরি, লোহা ও কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লোহার তৈরি এসব জিনিসের দাম গত বছরের চেয়ে এ বছর একটু বেড়েছে।
সম্পাদক : মোঃ মুরসালিন তালুকদার বার্তা সম্পাদকঃএম আর জয় (সাংবাদিক) অফিস : ২৪ পুরানা পল্টন, ড.নওয়াব আলী টাওয়ার লিফটের ৫ ইমেইল : bdprothombarta@gmail.com