1. admin@bdprothombarta.com : admin :
কিশোরগঞ্জ জেলায় নববর্ষ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে হালখাতা - বিডি প্রথম বার্তা
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ পূর্বাহ্ন

কিশোরগঞ্জ জেলায় নববর্ষ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে হালখাতা

মোহাম্মদ রুবেল,স্টাপ রির্পোটার
  • প্রকাশিত : শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১৯২ বার পঠিত

ইতিহাস থেকে জানা যায় মোগল সম্রাট আকবর ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দে হালখাতার প্রচলন করেন। পয়লা বৈশাখে ব্যবসায়ীদের দেনা পাওনা মিটিয়ে লাল খাতা বা নতুন খাতায় নাম লেখায় ক্রেতা সাধারন। দু- চারদিন ধরে চলে গান বাজনা ও মন্ডা মিঠাই এর আনন্দ উৎসব। এ দিনটি বাঙালী জাতিকে মনে করিয়ে দেয় বাংলা নব-বর্ষের কথা। নব-বর্ষবরণ ও হালখাতা একই সূত্রে গাঁথা হলেও কালের পরিক্রমায় এখন তার ভিন্ন চিত্র।

শুক্রবার কিশোরগঞ্জে পয়লা বৈশাখ সাড়ম্বরে পালন করা হলেও হালখাতার মত প্রাণের উৎসবে নেই কোন আয়োজন। এখন আধুনিক যুগে খাতার জায়গা করে নিয়েছে অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ড আর ডেবিট কার্ড। এতে তথ্য প্রযুক্তির পৃথিবী কাছে হালখাতা হার মানতে বসেছে। এইতো গেল কয়েক বছর আগে বৈশাখের প্রথম দিন উপজেলা শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল পর্যন্ত ছোট-মাঝারি-বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হালখাতার আয়োজন করতো। ছাপানো হতো নিমন্ত্রণপত্র, নানা আয়োজন, উৎসব উদ্দীপনার মধ্যে অনুষ্ঠিত হতো হালখাতা। ব্যবসায়ীরা বৈশাখের আগের দিন লালসালু মোড়ানো খাতা কেনাসহ দোকান পরিস্কার করে হরেক রঙের কাগজের ঝালর কাটা ফুল দিয়ে বর্ণিল সাজে সাজাতো। ক্রেতাকে আপ্যায়ন করতো জিলাপি, পুরি, পায়েস, খাজা, দই, চিড়া ও মুড়ি দিয়ে। এখন ইংরেজি বছরের জুনে গুটি কয়েক ব্যবসায়ী হালখাতা করে থাকেন।

তাদের খাবারের আয়োজনেও পরিবর্তন এনেছেন। ব্যবসায়ীরা হোটেল বুকিং করে টোকেন এর ব্যবস্থা করেন। ক্রেতারা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে দেনা মিটিয়ে একটি টোকেন দেখিয়ে হোটেল থেকে খাবার নেন।

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে দেখা যায়- পয়লা বৈশাখের কোথাও নেই হালখাতার আয়োজনে। এখন সেই বাংলা নববর্ষের হালখাতা স্থান দখল করে নিয়েছে ইংরেজি বর্ষের জুন মাস। উঃ দুরাকুটি পশ্চিম পাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষক ছায়েদ হোসেন জানান- আগে গৃহস্থ পরিবার ও চাকরিজীবী মনোহারীসহ বিভিন্ন দোকানে বছর মারানি বাকীতে খরচ করতেন। পয়লা বৈশাখ এলেই দাওয়াত কার্ডের মাধ্যমে হালখাতা অংশগ্রহণ করে পুরনো জের মিটিয়ে দিতেন। এতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা মাঝে সখ্যতাও গড়ে উঠেছিল।

এ রীতিনীতি আর চোখে পড়ে না। সদর উপজেলার বিশিষ্ট সার ব্যবসায়ী ফরহাদ আহমেদ টিটুল বলেন- বর্তমানে চাকরিজীবী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা প্রায় সবাই ইংরেজী মাসের ওপর ভিত্তি করে আয়-ব্যয় করেন। নগদ বিক্রি অথবা বাকি লেনদেন সবই হয় ইংরেজী মাসের ওপর ভিত্তি করে। তাই ধীরে ধীরে পয়লা বৈশাখে হালখাতা হারিয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রঞ্জিত কুমার এন্ড সন্স এর স্বত্বাধিকারী রাজিব  বলেন- আমার পূর্বপুরুষরা পয়লা বৈশাখে হালখাতা করেছেন। এ ঐতিহ্য আর নেই। হালখাতা কেবল হিসাবের নতুন খাতা খোলা নয়, ক্রেতা-বিক্রেতার আস্থা ও সম্পর্ক ঝালিয়ে নেওয়ারও আনুষ্ঠানিকতা।

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরও খবর
© All rights reserved © 2022 BD Prothom Barta
Theme Customized BY LatestNews