1. admin@bdprothombarta.com : admin :
শেখ কামাল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অগ্রযোদ্ধা - বিডি প্রথম বার্তা
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৬ অপরাহ্ন

শেখ কামাল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অগ্রযোদ্ধা

মোহাম্মদ রুবেল, স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশিত : শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩
  • ১২৪ বার পঠিত

‘ইতিহাস কথা বলে। সত্য উম্মোচিত হবেই হবে। মানুষ সত্যের সন্ধানে নেমেছে। শেখ কামালের (১৯৪৯-১৯৭৫) সুঘ্রাণ প্রবাহিত হচ্ছে। ইতিহাসের পাতায় পাতায় তল্লাশি শুরু হয়েছে। তাই শেখ কামালের জীবনচরিত জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। তাঁর নির্মল ও সাহসী জীবনযাত্রার ন্যায্য সম্মান প্রদান করা সময়ে দাবি।

বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ কামাল অদ্বিতীয়। তাঁর চরিত্র এমনই উজ্জ্বল যে তা সবাইকে অভিভূত করবে, উদ্দীপ্ত করবে ও আলোর পথে আহবান করবে। তরুণসমাজকে সাহস, সত্য ও বিনয়ের পথ দেখাবে। কারণ শেখ কামাল মানে সাহস ও বিনয়, নিরহংকার ও সাধনা। সময় ও সত্য আজ তাই সাক্ষ্য প্রদান করে।

শেখ কামাল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক চরিত্রের অধিকারী ও বৈশিষ্ট্যের মানুষ। অনন্য ও অনুসরণীয় শেখ কামাল তাঁর স্বল্প আয়ুর জীবনে যে কীর্তি রেখে গেছেন, তা তাঁকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তিনি নিজেকে পরিণত করেছেন সম্পূর্ণ ভিন্ন মানুষে যা বর্তমান দুনিয়ায় ক্ষমতাবান পরিবারে পৃথিবীর কোথাও দেখা যায় না। সত্যই যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। সত্য চিরকালই সত্য। তাই শেখ কামাল মানে সত্য, সুন্দর, সাহস ও ভদ্রতার ব্যাকরণ। সহজাত প্রতিভাগুণে শেখ কামাল আসলেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি।

অকালে শহিদ হবার পর রাজনৈতিক কারণে শেখ কামাল দৃশ্যপটের অন্তরালে চলে যান। ইতিহাসের দপর্ণে তিনি আবার দৃশ্যমান হয়েছেন। বাংলাদেশের বিশিষ্ট অধ্যাপক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, ক্রীড়াবিদ, সংগঠক, নাট্যকার, অভিনেতা, রাজনীতিবিদ, সহপাঠী, আত্মীয়স্বজন, অনুজ, অগ্রজ ও সাধারণ মানুষ যারাই জীবনে শেখ কামালের কাছাকাছি এসেছিলেন তাদের অনেকেই মতামত ব্যক্ত করেছেন। সকলেই শেখ কামালের আদবকায়দা ও বহুমাত্রিক প্রতিভার প্রশংসা করেছেন।

শেখ কামাল কেন জরুরি?

বহুমাত্রিক শেখ কামাল বর্তমান প্রজন্মের কাছে তেমন সুপরিচিত নয়। নানা কারণে তিনি জনগণের দর্পণে উপস্থাপিত হন নাই। বাংলাদেশের ইতিহাসে, স্বাধীনতা সংগ্রামে, সংস্কৃতিতে, শিল্পে, সাহিত্যে, সংগীতে, নাটকে, অভিনয়ে এবং ক্রীড়াজগতে যে অনন্যসাধারণ অবদান শেখ কামাল রেখেছেন তার যথার্থ মূল্যায়ন, সম্মান, স্বীকৃতি বাঙালি জাতি প্রদান করে নাই। তবে ইতিহাস কথা বলে। ইতিহাস সবাক, শেখ কামালের প্রকৃত রূপ, আলো-প্রতিভা, দক্ষতা, সাধনা এবং কৃতিত্বের পরিসর প্রকাশ, প্রচার ও প্রসারিত হচ্ছে।

শেখ কামাল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অগ্রযোদ্ধা

মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আজীবন লালিত স্বপ্ন ধারণ করেছিলেন জাতির পিতার বড় ছেলে শেখ কামাল। তিনি ছিলেন জাতির পিতার স্বপ্ন ও আদর্শ বাস্তবায়নের একজন অগ্রযোদ্ধা। রাষ্ট্রপতির সন্তান হয়েও তিনি অতি সাদামাটা জীবনযাপন করেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, খুব ছোটবেলা থেকেই সব ধরনের খেলাধুলায় তাঁর আগ্রহ ছিল প্রচণ্ড। ক্রিকেটই তাঁকে টানতো সবচেয়ে বেশি। নিখুঁত লাইন লেন্থ আর প্রচণ্ড গতির দীর্ঘদেহী ফাস্ট বোলার ছিলেন। আজাদ বয়েজ ক্লাবের হয়ে শেখ কামাল প্রথম বিভাগে ক্রিকেট খেলেছেন দীর্ঘদিন। শুধু খেলাধুলাই নয়, পড়াশোনা, সংগীতচর্চা, অভিনয়, বিতর্ক, উপস্থিত বক্তৃতা থেকে শুরু করে বাঙালির সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার চেষ্টা কোথায় নাই শেখ কামাল? ক্ষমতা ও ভদ্রতার ব্যাকরণ বিষয়ে শেখ কামালের অসাধারণ জ্ঞান ছিল।

বর্তমান আমলে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা ব্যতীত সমাজে, সংস্কৃতিতে এবং সর্বোপরি জাতীয় রাজনীতিতে দক্ষ নেতৃত্ব গড়ে তোলা সম্ভব নয়। ক্ষমতার সাথে জ্ঞানের সমন্বয় না হলে জাতির বিকাশ ঘটবে না— শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রগতি হবে না। তাই জ্ঞানগরিমা ও ক্ষমতা বিষয়ে ফরাসি চিন্তাবিদ মিশেল ফুকোর (১৯২৬-১৯৮৪) সাহায্য নিতে পারি। ‘ফুকোর মতে এই দুনিয়ায় ক্ষমতা বা দুনিয়াদারির সহিত জ্ঞানগরিমা বা সত্যসাধনার সম্পর্ক নিবিড় (সলিমুল্লাহ খান, প্রার্থনা, মধুপোক, ঢাকা, ২০১৯, পৃ. ১১৬)। প্রিয় পাঠিকা ও পাঠক ঠিক এই প্রশ্নের জবাব দেয়ার জন্যও শেখ কামালকে জানা জরুরি। জাতির সামনে তাঁর কর্মকাণ্ড ও চিন্তাধারার সাথে পরিচয় তুলে ধরা দরকার।

শেখ কামাল পথপ্রদর্শক

কল্পনা করুন শেখ কামাল একজন পথপ্রদর্শক। সারাবিশ্বের শ্রেষ্ঠ কৃতী মানব যাঁরা স্বল্পায়ু কর্মজীবন লাভ করেছেন—তাঁদের একজন আমাদের শেখ কামাল। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম কীর্তিমানদেরও অনেকে এমনতর বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী ছিলেন না যা আমরা শেখ কামালের স্বল্পায়ুর জীবনে দেখতে পাই। ক্রীড়া, সংগীত, রাজনীতি, সংগঠন, নাটক, অভিনয়, উপস্থিত বক্তৃতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং সেনাবাহিনী নানা ক্ষেত্রে শেখ কামাল সংক্ষিপ্ত জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সত্যি যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। তাই বলা যায় শেখ কামালের জীবনী বর্তমান প্রজন্মের অনেক দিশেহারা মানুষের পথপ্রদর্শক হতে পারে।

 

শেখ কামাল প্রজন্মের প্রেরণার শিক্ষক

অনন্য ও অনুসরণীয় শেখ কামাল তাঁর যাপিত জীবনে যে কীর্তি রেখে গেছেন, সঠিকভাবে সেই কীর্তি যদি বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা যায়, তিনি আজও তরুণসমাজের প্রতীকী নেতা হিসেবে তাদের মন ও মগজে উত্তম আসন পাবেন। আর তাঁর আদর্শ, কর্ম ও নীতি অনুসরণ করে তরুণসমাজ উন্নয়নের মহাসড়কে সামিল হতে পারবে। আলোচনা, পর্যালোচনা ও মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে শেখ কামাল হতে পারেন নব প্রজন্মের নব প্রেরণার উৎস ও শিক্ষক। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত হোক শেখ কামালের কীর্তি, আদর্শ, অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় নীতি।

শেখ কামাল: বেদনা ও সংগ্রামের বিষাদ সিন্ধু

শেখ কামালের জীবন ছিল এক ধরনের বেদনার, দুঃখের, সংগ্রামের বিক্ষুব্ধ সাগর। তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কখনই সুখের মুখ দেখেছেন বলে মনে হয় না। সমগ্র জীবনটাই ছিল চ্যালেঞ্জিং, দুঃখ-বেদনা আর ঝড়ঝঞ্ঝাপূর্ণ। এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক আ.ব.ম. ফারুক বলেন, ‘বরং কারণ ছিল, কামাল ভাইয়ের স্কুলজীবনের প্রায় পুরো সময়টাই বঙ্গবন্ধুকে জেলে কাটাতে হয়েছে (আ.ব.ম. ফারুক, ‘শেখ কামাল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাসংস্কার আন্দোলন, শহীদ শেখ কামাল: আলোমুখী এক প্রাণ, সম্পাদক : মো জাহিদ আহসান রাসেল, এমপি, পৃ. ৫৬)।

এই ঝঞ্ঝাপূর্ণ জীবনের মাঝেই স্বপ্ন বুনেছেন, স্বপ্ন দেখিয়েছেন দেশের তরুণসমাজকে জীবনের বাঁকে বাঁকে যুদ্ধ জয়ের। তিনি ঠিকই যুদ্ধে জয় লাভ করেছেন। দুঃখজনক হলো তিনি অকালেই জীবন থেকে, পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। অ

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরও খবর
© All rights reserved © 2022 BD Prothom Barta
Theme Customized BY LatestNews