আশরাফুল ইসলাম তুষার,কিশোরগঞ্জ:
ডিআইজি হারুন-অর-রশীদ কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার হোসেনপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তার বাবা বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাসেম, মাতা-জহুরা খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স, এমএসএস, এলএলবি (জাবি) থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করেন হারুন।
১৯৯৮ সালে ছাত্রলীগের বাহাদুর-অজয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন।
ছাত্রজীবনে হারুন প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষায় সর্বসময় প্রথম স্থান অধিকার করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে ২০তম ব্যাচে এএসপি হিসেবে পুলিশে যোগ দেন।
তিনি গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ছিলেন। ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার থাকা অবস্থায় ২১ সালের ২ মে হারুন-অর রশীদ অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পান। এরপর তিনি ঢাকা মহানগর (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার ছিলেন। পরবর্তীতে গত বছরের ১২ মে ডিআইজি পদে পদোন্নতি পান হারুন। তিনি দুইবার বিপিএম পদক ও দুইবার পিপিএম পদক পেয়েছেন।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিরোধীদলের হরতাল চলাকালে বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুককে মারধরের ঘটনায় আলোচিত হয়েছিলেন তিনি।
২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তৃতীয় দফায় গাজীপুর সদর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়ায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই বছরের ২১ এপ্রিল এসপি হারুনকে গাজীপুর থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর প্রত্যাহারের আদেশ তুলে নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে ওই বছর ৩ মে গাজীপুরের পুলিশ সুপার পদে পুনর্বহাল করে। ২০১৮ সালের ১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে গাজীপুর থেকে ডিএমপিতে বদলি করা হয়েছিল।ডি আইজি হারুন গাজীপুরে দায়িত্ব পালনের আগেও ডিএমপিতে দায়িত্বরত ছিলেন।
২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত পুলিশ সপ্তাহে ভাল কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বিপিএম পদকে ভূষিত করা হয়। এর পূর্বে তিনি দু’বার পিপিএম পদক লাভ করেন।
২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর হারুন অর রশীদ নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেন।
নারায়ণগঞ্জে এসপি হারুন অর রশীদ যোগদানের পর থেকেই সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, ভূমিদস্যুতা, ঝুট সন্ত্রাসী সহ সকল অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেন তিনি। একের পর এক সুনাম পাওয়ার মত কর্মকান্ড করে যান এসপি হারুন। এমনই এক ঘটনা ঘটে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মৌচাক এলাকায়। এসপির কাছে ভূক্তভোগী জমির মালিক ও ভাড়াটিয়া সহযোগীতা চেয়ে হস্তক্ষেপ চাওয়ার সাথে সাথেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীন পারভেজকে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করান এসপি হারুন।
সিদ্ধিরগঞ্জে জমি দখলের চেষ্টা ও মালামাল ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রথমে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান সিদ্ধিরগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি শাহীন পারভেজ। পরে পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদের হস্তক্ষেপে মামলা নিতে বাধ্য হন ওসি। মামলার পর সুষ্ঠু বিচার পাওয়ায় এসপি হারুনকে সাধুবাধ জানায় ভুক্তভোগী জমির মালিক ও ভাড়াটিয়া।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দিয়ে সাংবাদিক দের সাথে মতবিনিময়ে হারুন অর রশীদ বলেন, আমি খারাপ মানুষের জন্য আতংক ভাল মানুষের জন্য নই। আমি এই জেলায় সেবার মানুষিকতা নিয়ে আসছি। তাই মানুষের সেবাই করবো
তিনি আরো বলেন, আজ থেকে আমি যতদিন দায়িত্বে থাকবো কোন অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না। কোন সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড় নেই। যারা অরজগতা সৃষ্টি করে আর যারা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে তাদেরও কোন ছাড় নেই।এই জেলার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আমি কাজ করবো। এ জন্য সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাদের সহযোগীতা করবেন।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই জেলায় অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক আমরা সকল ধরনের কাজ করবো।
তিনি মতবিনিময় সভায় আরো বলেন, সাধারণ মানুষ যেন হয়রানি না হয় সেই লক্ষ্যে পুলিশ বক্স সার্বক্ষণিক একজন সিনিয়র অফিসারের মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে এবং দিন ও রাতে পালাক্রমে পুলিশবক্সে পুলিশ অবস্থান করবে।
নারায়ণগঞ্জে “প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা” অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তার বক্তব্যে বলেন, ভাল মানুষ ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সার্থক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রত্যেকের জীবনে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমি হাওর অঞ্চলের মানুষ প্রতিদিন মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে প্রাইমারী স্কুলে যেতাম। প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকরা পিতৃত্বসুলভ ও আন্তরিকতার সহিত আমাদেরকে পাঠ দান করাইতেন। শিক্ষকরা আমাদের বেত দিয়ে ও ডাস্টার দিয়ে লেখাপড়ার জন্য পিটিয়েছেন তখন আমাদের বাবা-মা কোন কিছু মনে করতেন না। তারা মনে করতেন শিক্ষক যা করছেন তা আমার ছেলের ভালোর জন্য করেছেন এবং মধুর সম্পর্ক মনে করেছেন। আমি সকল শিক্ষককে বলব না কিছু শিক্ষককে বলব যারা কোন টাকার বিনিময়ে পড়াতেন না, গরীব ছাত্রদের বিনা পয়সায় পড়াতেন। বর্তমান সমাজের দিকে লক্ষ করলে দেখবেন যে, ছাত্ররা শিক্ষকদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আজ-কাল শিক্ষকরা ছাত্রদের গায়ে হাত তুললে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন হচ্ছে। আসলে আমরা আমাদের জায়গা থেকে সরে যাচ্ছি। ছাত্র-শিক্ষদের সেই মধুর সম্পর্ক আর নাই। পুলিশ সুপার তার প্রিয় শিক্ষকের স্মৃতিচারণ করতে যেয়ে বলেন “কলেজ জীবনে গাঙ্গুলী স্যার আমাদের যে আন্তরিকতা ও পিতৃ সুলভ আচরণ দিয়ে পড়াতেন তা কোন দিন ভুলবার নয়। কিছু দিন আগে হাই স্কুলের শিক্ষক বিএসসি সাইফুল স্যার তার স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে সোনারগাঁ যাদুঘরে এসে ঘুরে গেছেন। এই গল্প সে সারা থানা এলাকায় বলে বেড়িয়েছেন। কলেজ জীবনের গাঙ্গুলী স্যার এখনো চিরকুট লিখে পাঠান “বাবা হারুন, এই লোকটার মেয়ের বিয়ে কিছু করতে পারলে করো” স্যারের এই চিরকুট পেয়ে আমি আমার সাধ্যমত সাহায্য করেছি। তাই প্রিয় শিক্ষকদের কোন দিনও ভুলবার নয়।
নারায়ণগঞ্জে পুলিশ সুপার থাকা সময়ে বেশ আলোচিত হয়ে উঠেন হারুন অর রশিদ যিনি এখন পুলিশের ডিআইজি ও ডিবি প্রধান হিসেবেও নিজেকে আলোচনায় রেখেছেন চাঞ্চল্যকর মামলার উদঘাটন সহ নানা ইস্যুতে। প্রায় তিন বছরের অধিক সময়ের আগে তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে বদলী হলেও এ শহরের মানুষ এখনো তার অভাব অনুভব করছে কয়েকটি ইস্যুতে। বিশেষ করে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান, শহরের ফুটপাত হকারমুক্ত, অবৈধ পরিবহন স্ট্যান্ড, মাদক ব্যবসা বন্ধ সহ শহরের শৃঙ্খলা ফেরাতে তিনি যে অতুলনীয় ছিলেন সেটা সম্প্রতি সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর কণ্ঠে স্পষ্টভাবে উঠে আসে।
গত ২৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মিলনায়তনে নগর উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় মেয়র আইভী তার বক্তব্যে সাবেক এসপি হারুন অর রশীদের অবদান তুলে ধরেন। আইভী পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, জেলার সাবেক এসপি হারুনের (বর্তমান ডিবি প্রধান) আমলে ফুটপাত, অটোরিক্সা, যানজট ও ট্রাকস্ট্যান্ড নিয়ম মেনে চলেছিলো। ফুটপাত দিয়ে সাধারণ মানুষ সুন্দরভাবে চলাচল করেছে। এখন কেনো সম্ভব হচ্ছে না? জেলা পুলিশের তো রেকার রয়েছে। আমাদের সিটি কর্পোরেশনের রেকার নেই। সে কারণে ট্রাফিক পুলিশের রেকার রাস্তা বুঝে কাজ করলে যানজট শহরে থাকে না। ইদানিং চুরি ছিনতাই বেড়ে গেছে। কয়েক মাস আগে ১২নং ওয়ার্ডে বিদেশী মেহমানের মোবাইল চুরি হয়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সেই মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছিলো, এমন ঘটনা আমাদের লজ্জা পড়তে হয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি নগরবাসীর সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় রাইফেল ক্লাবের সামনে, সমবায় মার্কেট ও খাজা সুপার মার্কেটের সামনে রয়েছে অবৈধ স্ট্যান্ড। হারুন অর রশিদ থাকতে এর কিছুই ছিল না। ফলে শহরের যানজট ছিল অনেক কম।
নারায়ণগঞ্জ শহরের মানুষ ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে পারে না হকারদের যন্ত্রনায়। পুরো শহরের মূল সড়কের সবগুলো ফুটপাত এখন হকারদের দখলে। পুলিশ প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান চালালেও হকারমুক্ত হচ্ছে না। বরং দিন দিন তাদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। অথচ হারুন অর রশিদ থাকতে সব ছিল ফকফকা। তিনি প্রায় সময়ই সাংবাদিকদের নিয়ে শহড়জুড়ে মহড়া দিয়ে হকার অপসারণ করতেন। সেই সাথে বিভিন্ন প্রেস ব্রিফিংয়ে বলতেন, ফুটপাত দিয়ে মানুষ চলাচল করবে। ফুটপাত হকারদের দখল করে ব্যবসা করার জন্য নয়। সেই সাথে মানুষের চলাচলে যাতে কোন বাধাবিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে এবং নতুন করে কেউ ফুটপাতে হকার বসাতে না পারে সেজন্য বিভিন্ন তৎপরতার কথা জানাতেন।
হারুন অর রশীদ থাকতে তিনি প্রতিদিন নগরবাসীর কথা শুনতেন। সকালে তার দপ্তরে শত শত মানুষ ভীড় করতেন। তিনি সব অভিযোগ শুনে তাৎক্ষনিক সমাধান দিতেন।
হারুন অর রশিদ ছিলেন সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের জন্য আতঙ্কের। ওই সময়ে মাদক বিক্রেতারাও ভয় পেতেন। কিন্তু এখন তার উল্টো। শহরে ছিনতাই বেড়ে গেছে প্রচুর। তার এসব অভিযানে যে অনেকের আতে ঘা লেগেছিল সেটাও ছিল স্পষ্ট। সে কারণে শহরে দুটি সমাবেশও হয়েছিল।
হারুন অর রশিদের সময়ে শহরে মোটরসাইকেল মহড়া ছিল না। অনেক প্রতিষ্ঠিত সন্ত্রাসীরা ছিলেন লাপাত্তা। অথচ এখন তারা আবার এলাকাতে ফিরে এসেছে।
এসপি হারুন ২০১৮ সালের ডিসেম্বর ও ১৯ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের অপরাধ সভায় পরপর তিনবার ঢাকা রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার নির্বাচিত হয়েছিলেন।মাদক উদ্ধার, মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, ওয়ারেন্ট তামিল, হকার উচ্ছেদ, শিল্প এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ নারায়ণগঞ্জ জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক হওয়ায় ধারাবাহিকতা ধরে রেখে ওই বছরের মে, জুন ও জুলাই মাসে একটানা পরপর তিনবারসহ সর্বমোট ষষ্ঠবার ঢাকা রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ এসপি নির্বাচিত হন তিনি।
ডি আইজি হারুন অর রশীদ ২০১৯ সালে পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সেক্রেটারী নির্বাচিত হন।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ তথা (জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ) জেলার সমিতির সদস্যদের সমর্থনে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন।
এসপি হারুন নারায়ণগঞ্জ জেলায় যোগদানের পর থেকে ভূমিদস্যুদের গ্রেপ্তার, মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তারসহ মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, জঙ্গিবাদ দমন, হকার উচ্ছেদ, রাস্তা দখলমুক্ত করা, প্রভাবশালীদের হাত থেকে ফ্ল্যাট মুক্ত করে প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর, এতিমদের সম্পত্তি ও মিল-কারখানা ফিরিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন কাজের জন্য প্রশংসিত হন।
নারায়ণগঞ্জে পুলিশ সুপার থাকা সময়ে তাঁকে ‘বাংলার সিংহাম’ উপাধি দেওয়া হয়েছিল। বর্তমান অরাজক এ নারায়ণগঞ্জ শহরে আবারও মানুষ ‘একজন সিংহামের অভাব’ অনুভব করছেন।শহরের অলিগলি, পাড়া-মহল্লায় সাটানো হয় পোস্টার, টাঙানো হয় ব্যানার। অবশ্য সিনেমার সিংহামের মতোই বাংলার সিংহাম হারুনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কমতি ছিলো না। নারায়ণগঞ্জে মাত্র ১১ মাস কাজ করার এক পর্যায়ে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে কর্মস্থল বদলি হয় হারুনের। যদিও পরে পুলিশের বিভাগীয় তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হন হারুন। আর দেশ ও মানুষের সেবার নব-উদ্যমে নিযুক্ত করেন নিজেকে।
নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর এই মেধাবী ও চৌকস পুলিশ কর্মকর্তাকে পদায়িত করা হয় ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগে। এই অঞ্চলে শিল্পাঞ্চল, সংসদ সচিবালয়, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও কার্যালয় এবং খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা থাকায়, এখানে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাকে সাহসী ও দক্ষ হতে হয়। বলা হয়, সেসময় তেজগাঁও অঞ্চলে পদায়ন করে মূলত এসপি হারুনের কর্মদক্ষতা আর সততার স্বীকৃতি দেয় সরকার।
করোনাকালে ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হারুন-অর-রশিদ। সেসময় জনসাধারণের সেবায় নানামুখী সহায়তা ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করেন তিনি। এছাড়াও মানুষকে ধোঁকা দিয়ে ভুয়া করোনার সনদ বিক্রিতে অভিযুক্ত চিকিৎসক সাবরিনাকে গ্রেপ্তারে শক্ত ভূমিকা পালন করে প্রশংসিত হন তৎকালীন ডিসি হারুন।
২০২১ সালের ১৩ মে পুলিশ সুপার থেকে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক বা অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পান হারুন-অর-রশিদ। এর পরপরই ওই বছরের ১৭ মে ডিএমপি গোয়েন্দা বিভাগ উত্তরের দায়িত্ব পান হারুন। তাকে ডিবি উত্তরের যুগ্ম-কমিশনার হিসেবে পদায়ন করা হয়। ওই পদে থাকা অবস্থায় গত বছরের ১৩ জুলাই উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক বা ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি।
এরপর ২০২২ সালের ১৩ জুলাই ডিএমপি গোয়েন্দা শাখার প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। আর ডিবি প্রধান হিসেবে হারুন দায়িত্ব পালনের মাত্র ছয় মাসেই সাধারণ মানুষের আস্থার সংস্থায় পরিণত হয় ডিবি।
তার কর্ম দক্ষতা, সততা,সাহসী কমর্কান্ড,সিনিয়রদের সম্মান ও অনুগত বিশ্বস্ত হয়ে আজ তিনি ডিআইজি হারুন।
যিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন।