কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছেন তাঁরা। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তোয়াক্কাই করেন না বাসের চালক-সহকারীরা।
গেটলক সার্ভিসের ভাড়া আদায় করা হলেও সেবা মেলে লোকাল সার্ভিসের। প্রতি স্টপেজেই চলে যাত্রী ওঠানামা। এর প্রতিবাদ করলে প্রভাবশালী পরিবহন ব্যবসায়ীদের হাতে লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়। বাসের হেল্পার, টিকেট মাস্টার কর্তৃক করা হয় মারধর-হয়রানি। বারবার এসব বিষয়ে অভিযোগ করেও প্রতিকার মিলছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে কিশোরগঞ্জের দূরত্ব কম/বেশি ১০২ কি.মি। অনন্যা বাসে ভাড়া নিচ্ছে ৩৩০ টাকা। কিলোমিটার প্রতি ভাড়া দাড়াচ্ছে ৩.২৩ টাকা। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী দূরপাল্লার বাসের কিলোমিটার প্রতি ভাড়া হবে ২.২০ টাকা। সুতরাং প্রতি কিলোমিটার এ বেশি ভাড়া নিচ্ছে ১.০৩ টাকা। অর্থাৎ যাত্রী প্রতি ১.০৩ টাকা বেশি। বিষয়টির প্রতি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নজর দেয়া উচিত।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের গাইটাল বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকাগামী অনন্যা, অনন্যা পরিবহণ, অনন্যা সুপার ও অনন্যা ক্লাসিক,যাতায়াত,কটিয়াদী থেকে জলসিঁড়ি এক্সপ্রেস, করিমগঞ্জের চামটা বন্দর থেকে উজানভাটি পরিবহন সহ প্রায় শতাধিক বাস কাপাসিয়া হয়ে মহাখালী পর্যন্ত চলাচল করে। এ পথে প্রায়ই ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যাতায়াত করেন রাফি আহমেদ।
তিনি বলেন, অনন্যা ক্লাসিক পরিবহনে তাঁকে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকা মহাখালির জন্য ভাড়া দিতে হয় ৩৩০ টাকা। আবার এয়ারপোর্ট নামলে দিতে হয় ৩২০ টাকা। বাসের ভাড়া আরো কম হবার কথা।
মো.আলী হোসেনের বাড়ি কিশোরগঞ্জ সদরে। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে কিশোরগঞ্জ শহরের দূরত্ব ১০২ কিলোমিটার। এ পথের জন্য অনন্যা পরিবহনে ৩৩০ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়। ঢাকা-কাপাসিয়া-কিশোরগঞ্জ সড়কের বাসগুলোয় ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য চলছে বলে অভিযোগ তাঁর। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত আগস্টের প্রথম সপ্তাহে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ পরিপ্রেক্ষিতে ৭ আগস্ট থেকে দূরপাল্লার বাসে প্রতি কিলোমিটারে ২ টাকা ২০ পয়সা ভাড়া নির্ধারণ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
জানা যায়, ভাড়ার নতুন হার শুধু ডিজেলচালিত বাসের জন্য। সিএনজিচালিত বাসের ভাড়া এক পয়সাও বাড়ানো যাবে না। তবে কিশোরগঞ্জ থেকে কাপাসিয়া হয়ে ঢাকা চলাচলকারী ওইসব পরিবহন কোম্পানি এর তোয়াক্কাই করছে না।
এ বিষয়ে জানতে কিশোরগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আহবায়ক হেলাল উদ্দিন মানিককে ফোন করলে তিনি অনন্যা পরিবহণের চেয়ারম্যান এর সাথে কথা বলতে বলেন।
কিশোরগঞ্জ অনন্যা পরিবহণের চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান বাবুলকে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।