আধুনিক স্থাপত্য শৈলীর অপূর্ব নিদর্শন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জন্য আধুনিক স্থাপত্য শৈলীর অপূর্ব নিদর্শন হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছার ফসল। গণপূর্ত অধিদপ্তরের অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের প্রচেষ্টায় নির্মিত। শত বছর এ স্থাপত্য শৈলীর নিদর্শন রবে এমন টাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩ উপজেলায় ও জেলা সদরে মোট ১৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে। ইতিমধ্যেই পাকুন্দিয়া ও কুলিয়ারচর উপজেলায় ২টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেছেন। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা ও কটিয়াদি উপজেলায় ২টি মসজিদ নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। আগামী ২৯ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধন করা হবে এ দুটি মডেল মসজিদ। করিমগঞ্জ, হোসেনপুর, তাড়াইল এ ৩টি উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী ও জেলা সদর মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ভৈরব ও বাজিতপুর উপজেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ করোনার কারণে দীর্ঘদিন বরাদ্দ না পাওয়ায় বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ঠিকাদার কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করায় পূর্বের দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে পুন:দরপত্র আহবান প্রক্রিয়াধীন। জানা যায়, ১৭০ ফিট বাই ১১০ ফিট স্থানের উপর মসজিদগুলো নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় গণপূর্ত বিভাগ। জেলা সদরের জন্য প্রায় ১৮ কোটি টাকা ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪ তলা বিশিষ্ট একটি মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ শীঘ্রই শুরু করা হবে। এসব মসজিদের প্রথম তলায় প্রতিবন্ধীদের জন্য নামাজের ঘর, মরদেহ গোসল ঘর, পানি সংরক্ষণ ঘর, গার্ড রুম, ইসলামিক বুক সেলফসহ বিভিন্ন সুবিধা থাকছে। দ্বিতীয় তলায় প্রধান নামাজের স্থান, অফিস কক্ষ, ইসলামিক রিসার্চ এন্ড অটিজম কেন্দ্র, মিটিং রুম থাকছে। তৃতীয় তলায় ইমাম ট্রেনিং সেন্টার, পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজ ঘর, গেস্ট রুম, ইসলামিক গ্রন্থাগার, টয়লেট জোন ও স্টাফদের রুম রয়েছে। জেলা গণপূর্ত বিভাগ জানায়, ইতোমধ্যে পাকুন্দিয়া উপজেলায় ১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ও কুলিয়ারচর উপজেলায় ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে ২টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধন হয়েছে। এছাড়া সদর উপজেলায় ও কটিয়াদি উপজেলায় যথাক্রমে ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ।এর মধ্যে সদর উপজেলার মডেল মসজিদের সকল কাজ সম্পন্ন, স্যানিটারি ফিটিংস ও বৈদ্যুতিক সংযোগ বাকি।কটিয়াদি উপজেলার মডেল মসজিদের সকল কাজ সম্পন্ন, বৈদ্যুতিক সংযোগ বাকি। গভীর নলকূপের কাজ চলমান। আগামী ২৯ ডিসেম্বর এ ২টি মসজিদ প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধন করা হবে। করিমগঞ্জ ও হোসেনপুর উপজেলায় ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজের করিমগঞ্জে ৩য় তলার গাঁথুনি ও প্লাস্টার এবং মিনারের কাজ শেষ। ডোমের মিনারের নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন। হোসেনপুরে ব্রিক ওয়ার্ক, প্লাস্টার ও মিনারের কাজ শেষ। তাড়াইল ও ভৈরব উপজেলায় ১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের তাড়াইলে ২য় তলার ছাদ ঢালাই সম্পন্ন। কাজের গতি মন্থর হওয়ায় ঠিকাদারকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। ভৈরবে ২৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়া কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত হয়েছে। পুন:দরপত্র আহবান করার প্রস্তুতি চলছে। বাজিতপুর উপজেলায় ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ কাজ ১৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।পূর্বের ঠিকাদারের কাজ বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে দরপত্র আহবান প্রক্রিয়াধীন আছে। নিকলী উপজেলায় ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ কাজ জমি বুঝে না পাওয়ায় এখনো শুরু করা যায়নি। জেলা সদরে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনে পূর্বের স্থান বাতিল করে নতুন স্থান নির্বাচন করা হয়েছে।পূর্বের চুক্তি বাতিলের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উদ্যোগকে বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করে জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাহাদুর আলী জানান, ইতিমধ্যে কিশোরগঞ্জে ২টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে। এ মাসের ২৯ ডিসেম্বর আরো ২টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হবে। করিমগঞ্জ, হোসেনপুর উপজেলা মডেল মসজিদ ২টি আগামী বছরের জুন মাসে কাজ সম্পন্ন হবে। অবশিষ্ট সকল মসজিদের কাজ জমি বুঝে পাওয়া সাপেক্ষে আগামী ২০২৪ সালের জুন মাসে সম্পন্ন হবে বলে আশা করেন তিনি।
উল্লেখ্য, এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ১৩ ধরনের বিশেষ সুবিধা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে—নারী ও পুরুষদের পৃথক ওজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, প্রতিবন্ধী মুসল্লিদের টয়লেটসহ নামাজের পৃথক ব্যবস্থা, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, ইমাম ট্রেনিং সেন্টার, ইসলামিক গবেষণা ও দ্বিনি দাওয়া কার্যক্রম, পবিত্র কোরআন হেফজখানা, শিশু ও গণশিক্ষার ব্যবস্থা, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আবাসন ও অতিথিশালা, মরদেহ গোসল ও কফিন বহনের ব্যবস্থা, হজ যাত্রীদের নিবন্ধনসহ প্রশিক্ষণ, ইমামের প্রশিক্ষণ, ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিসের ব্যবস্থা। মসজিদের ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে পবিত্র হজ পালনের জন্য ডিজিটাল নিবন্ধনের ব্যবস্থা থাকবে।
জেলা সদর এলাকায় নির্মাণাধীন প্রতিটি মসজিদে একসঙ্গে ১২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। উপজেলা ও এলাকার মডেল মসজিদে একত্রে ৯০০ মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে।
সম্পাদক : মোঃ মুরসালিন তালুকদার বার্তা সম্পাদকঃএম আর জয় (সাংবাদিক) অফিস : ২৪ পুরানা পল্টন, ড.নওয়াব আলী টাওয়ার লিফটের ৫ ইমেইল : bdprothombarta@gmail.com